এই ফলটি আসলেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হল কীভাবে এই কাজটি করে পেয়ারা। আসলে ফলটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামনি সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও সব উপকারি উপাদান, ত্বকের গভীরে জমতে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে ত্বক ফর্সা হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন...

 ১. ত্বকের সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত পেয়ারার দিয়ে বানানো ফেসপ্যাক মুখে লাগালে ত্বকের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে স্কিন টোনের উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। ফলে ত্বকের সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। এখ প্রশ্ন হল, পেয়ারার সাহায্যে কীভাবে বানাবেন ফেসপ্যাক? এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ পেয়ারা নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিতে হবে। তারপর তাতে ডিমের কুসুম মিলিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটচি পেস্ট। এরপর সেই পেস্টটা মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ভাল করে ধুয়ে ফেললেই কেল্লাফতে! প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতিতে ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে দেখবেন সময় লাগবে না।

২. অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্ষতি হবে কম: পেয়ারায় রয়েছে লাইকোপেন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে সূর্যালোকের কারণে ত্বকের সৌন্দর্য যাতে না কমে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পেয়ারা নিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর তা মুখে লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। সপ্তাহে ৩-৪ দিন এমনভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলেদেখবেন দারুন উপকার পাবেন।

৩. ত্বকের বয়স কমবে: নানা করণে অসময়েই কি বুড়িয়ে যাচ্ছে ত্বক, সেই সঙ্গে প্রকাশ পাচ্ছে বলিরেখা? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই ত্বকের পরিচর্যায় পেয়ারাকে কাজে লাগাতে শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। আসলে এই ফলটিতে উপস্থিত ভিটামিন এ, বি, সি এবং পটাশিয়াম, ত্বকের অন্দরে জমতে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে স্কিন সেলেদের যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের বয়স তো কমেই, সেই সঙ্গে বলিরেখাও মিলিয়ে যেতে শুরু করে। এই কারণেই তো ত্বকের পরিচর্যায় নিয়মিত পেয়ারাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৪. স্কিন টোনার হিসেবে কাজ করে: প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, মিনারেল এবং নানাবিধ উপকারি উপাদান থাকার কারণে শুধু পেয়ারা নয়, পেয়ারা পাতাকেও স্কিন টোনার হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে এক বাটি জলে পেয়ারা অথবা পেয়ারা পাতা সেদ্ধ করে সেই জল দিয়ে মুখ ধুতে হবে। এমনটা করলে ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগালে ত্বক বেজায় টানটান হয়ে ওঠে। যে কারণে বলিরেখার হাত থেকেও নিস্তার মেলে। প্রসঙ্গত, ব্রণর প্রকোপ কমাতেও একইভাবে যদি পেয়ারাকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার পাওয়া যায়।

 ৫. ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে: ডামার্টোলজিস্টদের মতে ত্বক যত আদ্র থাকবে, তত তার সৌন্দর্য বাড়বে। তাই কখনও যাতে ত্বকের আদ্রতা না কমে, সেদিকে খেয়াল রাখাটা জরুরি। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পেয়ারা। আসলে এই ফলটির শরীরের ৮১ শতাংশই জলে পরিপূর্ণ। তাই তো নিয়মিত একটা করে পেয়ারা খেলে ত্বকের অন্দরে জলের ঘাটতি দূর হয়। ফলে আদ্রতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।

৬. হেয়ার ফল কমায়: অতিরিক্তি চুল পড়ে যাওয়ার কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে পেয়ারাকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! আসলে ভিটামিন সি-তে পরিপূর্ণ থাকার কারণে এই ফলটি নিয়মিত খেলে স্কাল্পের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে চুলের গোড়া শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। ফলে মাত্রাতিরিক্তি চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা কমতে সময় লাগে না।

৭. ব্ল্যাকহেডস দূর হয়: এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পেয়ারা পাতা নিয়ে সেগুলিকে ছোট ছোট টুকরো করে নিতে হবে। তারপর তাতে জল মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটি পেস্ট। এবার সেই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করলেই দেখবেন ব্ল্যাকহেডসের প্রকোপ কমবে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে ত্বকের উপরিংশে জমতে থাকা মৃত কোষের স্তর সরে যাওয়ার কারণে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে চোখে পরার মতো। তো কি ঠিক করেছেন শুরু করবেন নাকি???