বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সারা দিন ধরে ইষদুষ্ণ জল খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে দেহের কর্মক্ষমতা তো বৃদ্ধি পায়ই, সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। একেবারেই ঠিক শুনেছেন! ত্বকের পরিচর্যায় বাস্তবিকই গরম জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে গরম জল খাওয়া মাত্র আমাদের শরীর এবং ত্বকের অন্দরে জমতে থাকা টক্সিক উপাদান বা বিষেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে পেটের রোগের প্রকোপ কমে, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, ওজন হ্রাস পায় এবং সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। গরম জল খেলে শরীরের যে একাধিক উন্নতি ঘটে, সে সম্পর্ক না হয় জানা গেল। কিন্তু এই অভ্যাসের সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ার সম্পর্কটা ঠিক কোথায়, তা তো জানা গেলে না। প্রসঙ্গত, সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে গরম জল খেলে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। ফলে অনেক উপকার মেলে। যেমন...

১. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে: অল্প দিনেই উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারি হতে চান কি? তাহলে আজ থেকেই গরম জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই স্বপ্ন পূরণ হবে। আসলে গরম জল শরীরে অন্দরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন ত্বকের গভীরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বেরিয়ে যায়, তেমনি কোলাজেনের উৎপাদনও বাড়তে থাকে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে সময় লাগে না।  

২. ত্বকের বয়স কমে: সম্প্রতি প্রকাশিত বেশ কিছু সমীক্ষা পত্র অনুসারে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশের মেট্রো শহরগুলিতে মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে পরিবেশে দূষণ, যার প্রভাবে ত্বকের এত মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে যে সময়ের আগেই বুড়িয়ে যাচ্ছে স্কিন। সেই সঙ্গে বাড়ছে একাধিক স্কিন ডিজিজের প্রকোপও। এমন পরিস্থিতিতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে গরম জল খাওয়ার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে সারা দিন ধরে গরম জল খাওয়া শুরু করলে পরিবেশে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানেরা সেভাবে ত্বকের বড় কোনও ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। সেই সঙ্গে স্কিনের ইলাস্ট্রিসিটও বাড়তে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক বুড়িয়ে গিয়ে সৌন্দর্য কমে যাওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

 ৩. ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে গরম জল খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে জলের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে, সেই সঙ্গে দেহের ভিতরে তাপমাত্রাও বাড়াতে থাকে। শুধু তাই নয়, মাথা থেকে পা পর্যন্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে ড্রাই স্কিনের সমস্যা কমতেও সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ত্বক হয়ে ওঠে বেজায় তুলতুলে।

 ৪. সংক্রমণের প্রকোপ কমে: একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত গরম জল খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে উপস্থিত সংক্রমণ সৃষ্টি করা উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণ, পিম্পল এবং অন্যান্য ত্বকের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

৫. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: গরম জল খাওয়া শুরু করলে চুলের অন্দরে থাকা কোষেদের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে একদিকে যেমন হেয়ার ফলের পরিমাণ কমে, তেমনি চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাই চুলকে সুন্দর করে তুলতে নিয়মিত গরম জল খেতে ভুলবেন না যেন!

৬. খুশকির প্রকোপ কমে: একেবারেই ঠিক শুনেছেন, খুশকির সমস্যা কমাতে বাস্তবিকই গরম জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে হলকা গরম জল খাওয়া শুরু করলে স্কাল্পের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খুশকির প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৭. চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়: নিয়মিত গরম জল খাওয়া শুরু করলে স্কাল্পের অন্দরে থাকা নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে চুলের গোড়া এতটাই শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে চুলের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগে না। তাই অল্প দিনেই যদি উজ্জ্বল, ঝলমলে চুলের অধিকারি হয়ে উঠতে চান, তাহলে এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!