শুনতে অবাক লাগলেও মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে শরীরের প্রায় প্রতিটি ভাইটাল অর্গ্যানের কর্মক্ষমতা বাড়াতে লেবু চায়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে লেবুতে উপস্থিত একাধিক কার্যকরী উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করা মাত্র নিজেদের খেল দেখাতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের দেহের সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের প্রকোপও হ্রাস পেতে থাকে। যেমন...

 ১. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে লেবুতে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন লেবু এবং ত্বকের সৌন্দর্যের মধ্যে সম্পর্কটা কোথায়! প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত লেবু চা খেলে ব্রণর প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বলিরেখা মুছে গিয়ে ত্বকের বয়সও হ্রাস পায়।

২. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: মলিকিউলার নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড রিসার্চের প্রকাশ করা একটা রিপোর্ট অনুসারে লেবুতে উপস্থিত ফ্লেবোনয়েড রক্তে লিপিডের পরিমাণ কমায়, সেই সঙ্গে আর্টারিতে যাতে কোনও ভাবেই ব্লাড ক্লট না করে সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়।

৩. শরীরকে বিষমুক্ত করে: খাবারের সঙ্গে এবং আরও নানাভাবে একাধিক ক্ষতিকর উপাদান প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে প্রবেশ করে চলেছে। আর রক্তে মিশতে থাকা এইসব টক্সিক উপাদান শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই এ বিষয়ে সাবধান থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? খুব সহজ! আজ থেকেই দিনে কম করে দুবার লেবু চা খাওয়ার অভ্যাস করুন, তাহলেই উপকার পাবেন। কারণ এই পানীয়টি টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে দ্রুত বার করে দিয়ে দেহকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাসি রুটি খেলে কত উপকার পাওয়া যায় জানা আছে? মনের সব ইচ্চা পূরণ হোক এমনটা চান নাকি? তাহলে ভগবান শিবের এই মন্ত্রগুলি পাঠ করতে ভুলবেন না যেন! নিয়মিত ডালিয়া খাওয়া উচিত কি? Featured Posts

৪. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড হজমে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। এখানেই শেষ নয়, খাবার উপস্থিত নানাবিধ পুষ্টকর উপাদান যাতে শরীরের ঠিক মতো কাজে আসতে পারে সেদিকেও লেবু চা বিশেষ খেয়াল রাখে।

৫. ভাইরাল ফিবারের প্রকোপ কমায়: খুব ঠান্ডা লেগেছে? সঙ্গে নাক দিয়ে অঝোরে ঝরছে জল? তাহলে এক্ষুনি এক ফ্লাক্স লেবু চা বানিয়ে রেখে দিন, আর দিনে কম করে ২-৩ বার পান করুন, দেখবেন উপকার পাবেন। কারণ লেবু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াদের প্রকোপ কমিয়ে এমন ধরনের শারীরিক সমস্যাকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে লেবু চায়ে অল্প করে আদা মিশিয়েও খেতে পারেন। এমনটা করলে আরও দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

 ৬. আয়রণের ঘাটতি দূর করে: সরাসরি না হলেও লেবু চা, দেহের অন্দরে আয়রনের ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে লেবুর অন্দরে থাকা ভিটামিন সি শরীরে আয়রনের শোষণ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজটির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে কমে অ্যানিমিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও।

৭. মানসিক চাপ কমে: পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই জানতে পারবেন বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ স্ট্রেস সম্পর্কিত নানাবিধ রোগের শিকার। আর সব থেকে ভয়ের বিষয় হল আক্রান্তের মধ্যে প্রায় সিংহভাগই অল্পবয়সি। তাই তো এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সাবধনতা অবলম্বন করা উচিত যাতে কোনও মারণ রোগ শরীরে এসে বাসা না বাঁধে। আর এক্ষেত্রে আপনার প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠতে পারে লেবু চা। কেন জানেন? যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে রক্তে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে লেবু বিশেষ ভূমিকা নেয়। দেহে টক্সিনের মাত্রা যত কমতে থাকে, তত মস্তিষ্ক চনমনে হয়ে ওঠে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস লেভেল কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা এবং সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগার মতো সমস্যাও দূরে পালায়

। ৮. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে: অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে নিয়মিত লেবু চা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। আসলে এই পানীয়টি খাওয়া মাত্র হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ফলে দেহের ইতি-উতি মেদ জমার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

 ৯. প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক: লেবুতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রপাটিজ রয়েছে, যা প্রতিনিয়ত নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা প্রায়শই ব্যাকটেরিয়াল অথবা ভাইরাল ইনফেকশনের শিকার হয়ে থাকেন, তারা নিয়মিত লেবু চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।

১০. ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়ে: জার্নাল অব এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্টির করা এক গবেষণা অনুসারে লেবুর রস আমাদের শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ইনসুলিনের অ্যাকটিভিটি বেড়ে যায়। ফলে শর্করা ভেঙে এনার্জির ঘাটতি পূরণ হয়। সেই সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তো আর দেরি কেন শুরু করে দিন।যদি অভ্যাস থাকে লেবুর চায়ের তাহলে ত ভালই আর তা না হলে আজকে থেকেই শুরু করুন।।