পাতি লেবুর ব্যাবহার সেভাবে না  হলেও বড়ি দিয়ে মাছের ঝোল হোক কি ডাল, গরম ভাতের সঙ্গে পাতি লেবু খাওয়ার চল রয়েছে বাঙালি খাদ্যরসিকদের মধ্যে। সেই কারণেই তো বাঙালিরা এত সুন্দর ত্বকের অধিকারি হয়ে থাকেন। অনেকেই বলে থাকেন বেশি মাত্রায় মাছ খাওয়ার কারণেই নাকি বাঙালিদের ত্বক এত সুন্দর হয়। কথাটা একেবারে যে ভুল, এমন নয়, তবে এক্ষেত্রে পাতি লেবুর অবদানকে ভুলে গেলে কিন্তু ভুল কাজ হবে। নিশ্চয় ভাবছেন পাতি লেবু খাওয়ার সঙ্গে ত্বকের ভাল-মন্দের কী সম্পর্ক, তাই তো? আসলে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত পাতি লেবু খাওয়া শুরু করলে ত্বকের স্বাস্থ্যের মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। এখানেই শেষ নয়, লেবুর রসকে কাজে লাগিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করলে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন...

১. ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে: ডার্মাটোলজিস্টদের মতে ত্বকের অন্দরে যত আদ্রতা ফিরতে থাকে, তত স্কিনের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। শুধু তাই নয়, অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার আশঙ্কাও কমে। তাই যে কোনও ঋতুতে ত্বককে যদি আদ্র রাখতে হয়, তাহলে লেবুকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো লেবুর রসের সঙ্গে সম পরিমাণ ডাবের জলে মিশিয়ে মুখে লাগান। এমনটা করলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা তো ফিরে আসবেই, সেই সঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতেও সময় লাগবে না।  

২. কুনুইয়ের কালো দাগ দূর হবে: খেয়াল করে দেখবেন অনেকেরই গোড়ালি এবং কুনুইয়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। ফলে শরীরের সৌন্দর্য কমতে সময় লাগে না। আপনিও যদি একই সমস্যার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে অর্ধেক লেবু নিয়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ যেখানে হয়েছে ,সেখানে ঘোষতে থাকুন। কয়েকদিন এমনটা করলেই দেখবেন কালা দাগ মিলিয়ে গেছে।

৩. ব্ল্যাক হেডকে নিমূল করে: সারা মুখ কি ব্ল্যাক হেডসে ভরে গেছে? তাহলে বন্ধু আজ থেকেই লেবু রাজে লাগিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করা শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। আসলে এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল ব্ল্যাক হেডসকে দূর করতে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে লেবুর রসকে। এক্ষেত্রে একটা লেবু থেকে সংগৃহীত রস সারা মুখে লাগাতে হবে। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন ধীরে ধীরে সমস্যা কমে গেছে। বাসি রুটি খেলে কত উপকার পাওয়া যায় জানা আছে? তামার গ্লাসে জল পান করলে কী কী উপকার মেলে জানা আছে? অর্থ, সমৃদ্ধি এবং মানসিক শান্তির অধিকারি হতে পুজো শুরু করুন শ্রী কৃষ্ণের! Featured Posts

৪. ত্বককে পরিষ্কার রাখে: সারা দিন পরিবেশ দূষণের মারে ক্ষতিগ্রস্থ ত্বকের পরিচর্যা করতে লেবুর রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই দিনের শেষে বাড়িতে ফিরে অল্প পরিমান লেবুর রসের সঙ্গে ট্রি-টি অয়েল মিশিয়ে একটা মিশ্রন বানিয়ে ফেলুন। তারপর তা দিয়ে সারা মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে ফেলুন। এমনটা নিয়মিত করলে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি তো ঘটবেই, সেই সঙ্গে স্কিনের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।

৫. হলুদ দাঁতকে সাদা করে: অতিরিক্তি মাত্রায় চা পান, ধূমপান এবং আরও নানা কারণে অনেকেরই দাঁতে হলুদ ছোপ ছোপ দাগ হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাঁতের সৌন্দর্য কমে চোখে পরার মতো।এমন হলে লেবুর সাহায্য নিন দেখবেন দাঁত ধপধপে সাদা হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ খাবার সোডার সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর তা দিয়ে নিয়ম করে দাঁত মাজতে হবে। এমনটা কয়েক সপ্তাহ করলেই দেখবেন হলুদ দাঁত, সাদা হতে শুরু করেছে।

৬.ত্বককে ফর্সা করে তোলে: লেবুর অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সাইট্রিক অ্যাসিড ত্বকের অন্দরে প্রবেশ করে ক্ষতিকারক টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বাড়ে, তেমনি স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। তাই অল্প দিনেই যদি ফর্সা ত্বকের অধিকারি হতে চান, তাহলে নিয়ম করে লেবুর রস মুখে লাগাতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত,ডার্ক স্পট দূর করার পাশাপাশি বলিরেখা কমাতেও লেবুর রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৭. চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়: নিয়মিত লেবুর রস চুলে এবং স্কাল্পে লাগালে চুলের গোড়ায় পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে একদিকে যেমন হেয়ার ফল কমতে শুরু করে। তেমনি চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, খুশকি এবং ড্রাই স্কাল্পের মতো সমস্যা কমাতেও লেবুর রস দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে।এইরকম আরো টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।